গরুর খামার তৈরির নকশা এবং গরুর বাসস্থান তৈরির নিয়ম

 আরবি ১২ মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৫ 

গরুর খামার তৈরির নকশা এবং গরুর বাসস্থান তৈরির নিয়ম হচ্ছে খামার ব্যবস্থাপনার পূর্ব পরিকল্পনার একটি অংশ। আধুনিক পদ্ধতিতে খামার ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপই হচ্ছে গরু বাসস্থান তৈরির নিয়ম সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে গোয়ালা নির্মাণে অগ্রসর হওয়া। গোয়ালা নির্মাণের পূর্বে অবশ্যই একজন উদ্যোক্তাকে প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। 

গরুর-খামার-তৈরির-নকশা


আধুনিক পদ্ধতিতে খামার ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা করতে গরুর খামার এর প্রয়োজন আছে ।আধুনিক পদ্ধতিতে খামার ব্যবস্থাপনার সফল হতে হলে গরুর বাসস্থানের প্রকারভেদের কোন খামারের কোন পদ্ধতি প্রয়োজন। উপযোগী সেই সম্পর্কে সম্যক ধারণা বাস্তবায়ন প্রকল্পের সম্পর্কে সম্যক ধারনা রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধাবিত হওয়া উচিত।

 সূচিপত্রঃ গরুর খামার তৈরির নকশাই এবং গরুর বাসস্থান তৈরির নিয়মাবলী নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • গরুর বাসস্থান তৈরি করা হয় কেন 
  • গরুর বাসস্থান কোথায় হওয়া উচিত 
  • গরুর বাসস্থান কেমন হওয়া উচিত 
  • একটি গরুর জন্য কতটুকু জায়গা প্রয়োজন 
  • গরুর বাসস্থান কত প্রকার ও কি কি 
  • গরুর গুদামঘর কি 
  • গরুর গুদম ঘর নির্মাণ পদ্ধতি
  • খামার পরিচালনার পদ্ধতি সমূহ
  • বাধা ঘর পদ্ধতিতে গোশালার প্রকারভেদ 
  • মুখোমুখি বা অন্তবর্তী পদ্ধতির ঘোষালী কেমন হয় 
  • একটি পূর্ণ খামারে গোশালা র অন্যতম পদ্ধতি
  • শেষের কথাঃ  গরুর খামার তৈরি নকশাএবং গরুর বাসস্থান  তৈরির নিয়ম

গরুর বাসস্থান তৈরি করা হয় কেন 

খামারের স্থান নির্বাচনের যেসব বিষয়গুলো বিবেচনা আনতে হয় ,সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো ঃ

অপেক্ষাকৃত উঁচু ও শুষ্ক ভূমি গাভীর খামার স্থাপনের জন্য উঁচু  মরুভূমি নির্বাচন করতে হবে যেন বৃষ্টির পানি বা খামারের অন্যান্য পদার্থ সহ্ নিষ্কাশন করার যায় এবং খামারটিও শুষ্ক ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে ।খাবারের অবকাঠামো নির্মাণ তুলনামূলকভাবে উর্বর ভূমি বাদ দিয়ে অনির্ভর ভুমিতে নির্মাণ করতে হবে আমার ঘর হওয়া উচিত রোদের মুখে খুব এর প্রয়োজন থাকে এবং গোয়াল ঘরে খামারের অন্যতম ভূমিকা পালন করে ।

উচ্চারণ ভবিষ্যতের গাভীর ঘামার সম্প্রসারণ করার জন্য আশেপাশে জায়গা থাকতে হবে ।তাই খামারের জন্য অপেক্ষাকৃত অল্প মূল্যে ও সহজে জমি পাওয়া যায় ।গাভীর খামারে যথেষ্ট জায়গা লাগে এই কারণে গুরুত্ব রাখতে হবে । জনবসতি থেকে দূরে অবস্থানগাভীর খামার স্থাপন করা অতি উত্তম। বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। 

খাদ্যের প্রাপ্যতা খামার তৈরির ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়ার আগে হাটের প্রাপ্যতা গুরুত্ব দেওয়া উত্তম। কেননা অল্প মূল্যে পাওয়া যায় এমন কাঁচা ঘাস উৎপাদন করা যা। এমন স্থান নির্বাচনের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। পানি ব্যবস্থাপনা পানির ব্যবস্থা অতি গুরুত্বপূর্ণ ।কারণ গাভীর খামারে অথবা যে কোন খামারে পানি প্রয়োজন আগে অধিকার দিতে হবে ।কারণ পানি না থাকলে খামার উন্নত হবে ন।এজন্য পানি সরবরাহকে আগে গুরুত্ব দিতে হবে। 

বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা খামারের জন্য নির্বাচন করতে হবে, যাতে বিদ্যুতের তারে খুঁটির সাথে সংযোগ যায়, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকলে খামার সম্পূর্ণ করা যাবে না।পণ্যের চাহিদা বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা থাকা অতি জরুরী ।কেননা চাহিদা ব্যবস্থা যেখানে নেই, সেখানে খামারের কোন মূল্য নেই ।তাই পণ্যের চাহিদা বা বাজার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

পরিবেশ হচ্ছে একটি অন্যতম ব্যবস্থা দিক কারণ বন্য জীবজন্তু বা অবাঞ্ছিত লোকজন খামার ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। এমন স্থান খামারের জন্য নির্বাচন করতে হবে ।এজন্য খামারের আশেপাশে জলাভূমি বা  লোকের আসা যাওয়া খামারের জন্য ভালো। খামারের জন্য নির্বাচন করতে হব।তাছাড়া খামারের আশেপাশের জলাভূমি বা হাউজ না থাকাই ভালো।

গরুর বাসস্থান কেমন হওয়া উচিত 

গবাদি পশুর বাসস্থান নির্মাণ করতে হবে খুব সাবধানতার সাথে। কেন না গরু যেখানে থাকবে সেখানে ভালো জায়গা করার জন্য গুরুত্ব দিতে হবে। নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হলোঃ

  •  পানি ও বৈদ্যুতিক আলোক সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে 
  •  পশুর জন্য আরাম দায়ক ও স্বাস্থ্য রক্ষার উপযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়
  •  পশুর সংখ্যা বয়স প্রকৃতি অনুযায়ী বাসস্থান নির্মাণ করতে হবে।
  • গরুর বাসস্থান অবশ্যই টেকসই ও মজবুত হতে হবে 
  • গফুর অন্যান্য আবর্জনা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে 
  • গরুর ঘর নির্মাণের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন উঁচু-নিচু জায়গা না হয় এবং পানি না জমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। 
  • ঘরটির মোটামুটি খোলা জায়গায় দক্ষিণ মুখে করে তৈরি করতে চেষ্টা করতে হবে ,যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে তীব্র তাপদাহে থেকে প্রকৃতির কিছুটা সুরক্ষা পেতে হলে তার আশেপাশে গাছ লাগাতে হবে। 
  • ঘরটি টিনের চালা তালা তৈরি করতে হলে বাসের চাটাইয়ের সিলিং দিতে হবে এবং গরমের গরুর অসুবিধা না হয় এ জাতীয় ঘরের বেড়া বা দেয়াল দেয়ার প্রয়োজন হয় না।
  •  চারিদিকে খেয়াল রাখতে হবে তবে চোর বা জানোয়ারের উপদ্রব হতে রক্ষা করার জন্য চারিদিকে পাশের খুব বেড়া বা নিচে থেকে এক মিটার উঁচু করে লোহার বেড়া দেওয়া উত্তম ।

গরুর জন্য যা কতটুকু জায়গা প্রয়োজন

লাভজনক খামার ব্যবস্থাপনা প্রতিটি গরুর জন্য কতটুকু জায়গা রেখে খামার স্থাপন করতে হবে তা গবেষণা করতে হবে যেমন পশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় থাকে তেমনি খামারের স্থান সংকলন লাগবো হয় খাওয়ার ব্যবস্থাপনা নির্মাণ করবে নির্দিষ্ট জায়গা রেখে ঘরে স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। 

আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত খামার ব্যবস্থাপনা প্রতিটি গুরুর জন্য লম্বালম্বি ভাবে দৈর্ঘ্য সর্বনিম্ন পাসপোর্ট এবং সর্বোচ্চ ৫ পয়েন্ট ৫০ এর বেশি হওয়ার প্রয়োজন নেই অনুরূপভাবে পাশের দিকে প্রস্থ সর্বনিম্ন ৩ ফুট এবং সর্বোচ্চ তিন ফুট ৫০ এর বেশি বেশি হওয়ার প্রয়োজন নেই গরুর খামার পাতের দৈর্ঘ্য হওয়া উচিত দুই ফুট এবং ময়দা নিষ্কাশনের জন্য নালা থাকতে হবে এক ফুট বিশিষ্ট এতে খামারের বৈশিষ্ট্যতা বজায় রাখবে ।

আরো পড়ুনঃ  

প্রাথমিক ধারণার ব্যবস্থা পেতে হলে নিচের বিভিন্ন ধরনের গোবাদী পশুর প্রতিটি মেঝের জন্য ও খাবার পত্রে জায়গার পরিমাণ উল্লেখ করে একটা ছক দেওয়া হলঃ

গরুর বাসস্থান কত প্রকার ও কি কি 

গরুর ঘর নির্মাণে সাধারণত আবহাওয়া ভূগোলিক অবস্থান অর্থনৈতিক ও বিভিন্ন অবস্থার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় । তাই বিভিন্ন অঞ্চল বা দেশের পশুর গৃহ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে ।আমাদের এই দেশে আবহাওয়া উপযোগী প্রধানত পশু গৃহ নির্মাণ করা হয়ে থাকে। যেমন ঃ

  • উদাম ঘর 
  • বাধা ঘর 
  • গরুর গুদাম ঘর কি 

গরুর গুদামঘর বলতে বোঝায় যে সব গরু বাচ্চা দু ধরনের সময় ছাড়ার দিন ও রাত্রে গোবাদী পোশাকে দেয়াল বৈশিষ্ট খোলা জায়গায় পালন করা হয় তবে প্রতিকূল অবস্থা যেমন ঝড় বৃষ্টি গরম ঠান্ডা ইত্যাদি ধরনের সময় প্রসে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ঘর সংযুক্ত থাকে এ ধরনের বাস গৃহে একটু খাদ্য পত্র ও পানির ল পাত্রের সকল পশুর জন্য উন্মুক্ত থাকে বয়স্ক কিছু বাছুর কিংবা সুবিধা সুবিধামতো দুধ দিচ্ছে না এমন গাভীর জন্য উদাম ঘর অধীনে একটা সুবিধা জনক ঘর বানাতে হবে।

উদাম ঘরের সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নে ছকের মাধ্যমে দেখানো হলঃ

  গরুর গুদাম ঘর কি

 পদ্ধতিতে একটি আলাদা ঘর থাকবে যা র দুধ দহনের সময় প্রসবকালীন সময়, গাভীকে পরিষ্কার করার সময় কিংবা বিভিন্ন অবস্থায় বহিষ্কার রাখা হয়, ঘরের মেঝে নির্মাণ করতে হবে , পরিষ্কারের সুবিধার জন্য বছর নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশগতভাবে গ্রহণযোগ্যতা করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ

প্রকল্প কর্তৃক নির্ধারিত ডিজাইনের গাভী সেট নির্মাণের জন্য কমপক্ষে ২৫ ফুট গুনন ১৫ ফুট জায়গা এবং পেট বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের জন্য চাহিদা অনুসারে পর্যাপ্ত নিজস্ব জায়গা দিতে হবে অন্যের জায়গা কিংবা ভাড়া বা চুক্তিভিত্তিক হলে হবে না। খামারে স্থাপনের জন্য সুনির্দিষ্ট মানদন্ড এর ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

খামার পরিচালনার পদ্ধতি সমূহ 

খামার নির্বাচন থেকে শুরু করে পরিচালনার পদ্ধতি সমূহ জানা অতি জরুরী তাই এমনি এমনি আমার পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।গরুর খামার তৈরির নকশা এবং গরুর বাসস্থান  তৈরির নিয়ম

  • খামারে নির্বাচনের মানদণ্ড খামার নির্বাচন প্রক্রিয়া 
  • খামার পরিচালনা পদ্ধতি 
  • প্রাণিসম্পদ প্রযুক্তি সমূহ ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণ ও অনুসরণ 
  • প্রদর্শনে খামারে সংযুক্তির সম্প্রসারণের কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠান 
  • চুক্তি স্বাক্ষর ও প্রদর্শনী খামারে সাং বোর্ড 

গরুর খামার পরিচালনার পদ্ধতি গুলো জানা অতি জরুরি। উপরে উক্ত তথ্যগুলো আলোচনা করলে দেখা যায়খামার পরিচালনার জন্য এগুলো অতি জরুরী । উদাম ঘর হবে খোলামেলা যেখানে মুক্তভাবে বিচরণ করবে। এই পদ্ধতিতে একটি আলাদা ঘর থাকতে যা দুধ দহনের সময় ,প্রস্রাব কালীন সময়ে, গাভীকে পরিষ্কার করার সময় এবং বিভিন্ন অবস্থায় রাখা যায়। ঘরের মেঝে নির্মাণ করতে হবে সিমেন্ট ও ইট দিয়ে পরিষ্কার ও অমসৃণ করতে হবে। যাতে পিছলে না যায় ।

বাধা ঘর পদ্ধতিতে গোশালার প্রকারভেদ

বর্তমানে আধুনিক পরিবেশে আধুনিকভাবে বাণিজ্যিক গত ভাবে খামার করা হচ্ছে অধিকাংশই বাধা ঘর পদ্ধতিতে। বাধা ঘর হচ্ছে গরুর গলায় দড়ি বা লোহার জিঞ্জির দিয়ে সীমাবদ্ধ স্থানে বেঁধে রাখা ।একই স্থানে গাভীর দুধ দোহন ও খাবার কাজ সম্পন্ন করা হয়। বাধার ঘর পদ্ধতি গোশালা আবার দুই প্রকার।

  • এক সারি বিশিষ্ট গোশালা 
  • দুই সারি বিশিষ্ট গোশালা

এক সারি বিশিষ্ট গোশালাঃ এটা সাধারণত অল্প সংখ্যক গরু নিয়ে যে খামার নির্মাণ করা হয় ।সেটা হচ্ছে বিশিষ্ট গোশালার মান নির্মানের গরুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ টি হয় ।এবং পশু সংখ্যা অনুসারে জায়গার পরিমাণ নির্ণয় করতে হয়। প্রতিটি পশু  রাখার জন্য লোহার তৈরি জিআই পাইপ দিয়ে পার্টিশন দিয়ে দিতে হয় ।সাধারণত পার্টিশনের ৯০ সেন্টিমিটার ৩ ফুট উচ্চতা ৪৫ সেন্টিমিটার ১.৫০ফুট হওয়া প্রয়োজন। এবং ঘরের ছাদ ৩০০ সেন্টিমিটার ১০ ফুট উঁচু করতে হবে।

দি সারি বিশিষ্ট গোশালাঃ এই খামারে অনেকগুলো গরু পালনের জন্য দুই সারী বিশিষ্ট বাণিজ্যিকভাবে  অধিক পশুর পালনের প্রয়োজন হয় ।এই ধরনের ঘোশালা পশুকে দুইভাবে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়।

মুখোমুখি বা অন্তবর্তী পদ্ধতির গোশালা কেমন হয় 

এই পদ্ধতির গোশালায় পশুকে দুই সারিতে মুখোমুখি অবস্থানে রাখা হয়। উভয়সারির সামনে খাবার পাত্রের ব্যবস্থা থাকে ।উভয় সারির মাঝখানে পরিদর্শকের চলাচল ও খাদ্য সরবরাহের জন্য রাস্তা রাখা হয়। মুখোমুখি পদ্ধতির গোশালা পশুর সমগ্র খাবারের অন্তর্ভুক মুখী থাকে ।এই পদ্ধতিতে প্রবেশ করানোর জন্য প্রতিটি সারির পিছন দিয়ে পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয় এবং তার পিছনে পয় নিষ্কাশনের জন্য জায়গা রেখে মুখোমুখি পদ্ধতির গোশালা নির্মাণ করা হয়। এই মুখোমুখি গোশালার আবার সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।

সুবিধা ঃ

  • মুখোমুখি পদ্ধতির গোসলের সুবিধা দেখতে ভালো লাগে
  • পশুর নড়াচড়া এবং নিজের জায়গায় থাকতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
  • গোশালায় সূর্যলোকের আলো পোড়াতে দ্রুত রোগ জীবাণু ধ্বংস হয়। 
  • এক সাথে দুই সারি পশুকে খাবার সরবরাহ করতে সুবিধা জনক। 
  • গাভীর দুধ দোহনের সময় অধিকতর আলো পাওয়া যায়। এতে গাভী আলো বাতাস পাওয়াতে অনেক সুবিধা জনক মনে হয়।

অসুবিধা সমূহ ঃ

  • অনেকগুলো গরু থাকার কারণে গাভীকে দুধ দোহন ও পরিষ্কার করতে অসুবিধা হয়। 
  • এক গরুর শ্বাস-প্রশ্বাস অন্য গরুর গায়ে লাগে ,এতে গরুগুলোর অসুবিধা হয়। 
  • এই খামারে সরাসরি বাতাস গ্রহণ করতে পারে না। 
  • যেকোনো সমস্যা চোখে পড়ে না তাই বিভিন্ন রোগে বা কোন ক্ষত হলে গরুর পরিবর্তন টাও চোখে পড়ে না।

বহিমুখী পদ্ধতিতে গরুর খামার তৈরির নকশা করার জন্য ছয় ফুট জায়গা রাখতে হবে ।উক্ত প্রবেশ করার রাস্তা দুই পাশে এক ফুট করে রাখলে পয় নালার জন্য মুখোমুখি পদ্ধতির গোশালায় মতো এই পদ্ধতিতে প্রতিটি গরুর স্টলের জন্য লম্বালম্বি ভাবে দৈর্ঘ্য ৫ ফুট পাশের দিকে প্রস্থ ৩ ফুট জায়গা রাখতে হবে ।

গরুর-খামার-তৈরির-নকশা-এবং-গরুর-বাসস্থান -তৈরির-নিয়ম


অনুরূপভাবে মহিষের জন্য লম্বালম্বি ভাবে দীর্ঘ ৫ .5ফুট এবং পাশের দিকে প্রস্তুত ৩.৫ ফুট জায়গা বরাদ্দ রাখতে হবে। প্রতিটি সারির সামনের দিকে খাবার ও পানির পাত্রের জন্য ২ফুট এবং চলাচল খাবার ও পানি সরবরাহের জন্য ৩ ফুট করে জায়গায় রাখতে হবে।

একটি পুণ্য খামারে গোশালার অন্যান্য ঘর একটি পূর্ণাঙ্গ খামারের গোশালের অন্যতম ঘর থাকা বাঞ্ছনীয় ।তাই বাণিজ্যিক খাবার ব্যবস্থা পনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু ঘর থাকা। নিচে সেগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

দুগ্ধ দহন শালাঃ একটি পূর্ণাঙ্গ গোয়ালার গাভীর দুধ দোহনের জন্য পৃথক পৃথক দুগ্ধ গহন ঘরের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এটি সাধারণত উদাম ঘর পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় ।এই ঘরটি এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন সেখানে ময়লা বা ধুলোবালি প্রবেশ করতে না পারে। এই ঘরে দুগ্ধ দহন ও দুগ্ধ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও যন্ত্রপাতি মজুদ করে রাখা হয়।

প্রসূতি ঘরঃ গাভীর বাচ্চা প্রসবের জন্য প্রস্রাবের দুই থেকে তিন সপ্তাহপূর্ব থেকে গাভীকে যে ঘরে পৃথক করে রাখা হয় তাকে প্রসূতি ঘর বলে ।সাধারণত প্রযোজনখম  গাভীর মোট সংখ্যার ৫ ভাগ প্রসূতিঘর থাকা আবশ্যক। এই ঘরে ৩ x ৪ মিটার অংশ আবৃত এবং ৩.৫মিটার অংশ দেয়াল দিয়ে ঘেরা থতার। ঘরের মেঝেতে বড় ও বিচালি দিয়ে বিছানা করা উচিত।

বাসরের ঘরঃ দুগ্ধদানের জন্য ঘরের পাশে বছরের ঘর থাকা আবশ্যক ।এতে বাছুর দিয়ে দুধ দহন বাছুর দুধ খাওয়ানো ও যত্ন নেওয়া সহজ হয় ।বাছুরের সংখ্যা বেশি হলে বয়স অনুযায়ী পৃথক ঘর থাকতে হবে এবং গাভীর পাশে বাছুর থাকলে ভালো হয়।

বকনের ঘরঃ বকন ৬ মাস বয়স থেকে প্রযোজন খম হওয়া পর্যন্ত পৃথক ঘরে পালন করা ভালো ।বকনের শেড শুষ্ক গাভীর শেডের পাশে হওয়া ভালো যেন তারা সুস্থ থাকতে পারে।

অসুস্থ পশুর ঘরঃ  অসুস্থ পশুর ঘরটি অন্যান্য ঘর থেকে একটু দূরে করা উচিত ।কারণ রোগাক্রান্ত পশুর হতে রোগ জীবাণু অন্য সুস্থ গরুতে পশুতে সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে ।তাই অসুস্থ গরুর ঘর অনেকটা দূরে রাখতে হবে। উক্ত ঘরের সাথে নর্দমা নালা সবকিছুই পৃথক করে রাখতে হবে ।সাধারণত এই ঘরটি ১৫ x ১০ ফুট মাপের হতে পারে।

ষাঁড়ের ঘর সব সময় ষাঁড়ের ঘর আলাদা করতে হয়। প্রতিটি ষাঁড়ের  পৃথক ঘরে থাকতে হবে ।সাধারণত ৫০টি গাভী বকনের জন্য একটি ষাড় প্রয়োজন । ষাঁড়ের ঘরের তিন গুণন ৪ মিটার অংশ আবৃত এবং ১২০ বর্গমিটার অংশ খোলা থাকতে হবে ।খেয়াল রাখতে হবে ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে ।এই ঘরে অন্যান্য ঘরের মতো খাবার পাত্র ও পানির পাত্র রাখতে হবে । ষাঁড়ের ব্যায়ামের জন্য দুই থেকে তিন ফুট দেয়াল বা বাসের বেড়া দিয়ে মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এমনভাবে এমন জায়গায় ঘরটি তৈরি করতে হবে যেন ওই স্থান থেকে অন্যান্য পশুকে দেখতে পায়।

লেখকের মন্তব্য 

একটি ভাল খামার ব্যবস্থাপনা পূর্ব শতই হচ্ছে একটি মানসম্মত ও পরিবেশ বান্ধব গোশালা নির্মাণ ।তাই গোশালা নির্মাণের পূর্বে অবশ্যই একজন খামারিকে আধুনিক পদ্ধতির নিয়মে গরুর খামার তৈরির নকশা এঁকে ইহা তৈরির নিয়মাবলী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে ।অন্যথায় পোশাকে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খামারে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। গরুর বেড়ে ওঠা দেখা দিতে পারে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা। আর প্রতিবন্ধকতা যদি থাকে তাহলে খামারে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে ।এজন্য খামারিকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে ।

আশা করি যারা আধুনিক পদ্ধতিতে গবাদি পশুর খামার করে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে চান। তাদের জন্য এই উপদেশগুলো অনেক সহায়ক হবে ।এই উপদেশগুলো পড়ে উপকৃত হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন ।এখানে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে কিংবা কোন তথ্য সংযোজনের ভুল থাকলে কমেন্ট বক্সে সুনিশ্চিত মতামত পেশ করুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url